বাংলাদেশের ভিতরে বিমানে ভ্রমণ: একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড
বাংলাদেশের ভিতরে বিমানে ভ্রমণ: একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিমান ভ্রমণ বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় এবং সুবিধাজনক মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সময়ের সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক অভ্যন্তরীণ বিমানযাত্রা এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর থেকে সহজেই করা যায়। আপনি যদি বাংলাদেশের কোনো শহর থেকে আরেকটি শহরে বিমানে ভ্রমণের পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।
১. বিমানের রুট এবং গন্তব্য
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিমান ভ্রমণের জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় রুট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর, খুলনা, যশোর ইত্যাদি শহরগুলো প্রধান গন্তব্য হিসেবে রয়েছে। সবচেয়ে সাধারণ রুট হচ্ছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার এবং রাজশাহী।
২. বিমান সংস্থাগুলি
বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ বিমানে যাতায়াতের জন্য বেশ কিছু বিমান সংস্থা রয়েছে। প্রধান বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
Biman Bangladesh Airlines (বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস): এটি বাংলাদেশের জাতীয় বিমান সংস্থা, যা দেশের বিভিন্ন শহরের মধ্যে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে।
Novoair: Novoair বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় অভ্যন্তরীণ বিমান সংস্থা, যা বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে।
US-Bangla Airlines: এই বিমান সংস্থাটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে।
Air Astra: এটি একটি নতুন বিমান সংস্থা, যা অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে।
৩. বিমান ভাড়া এবং টিকেট কেনার পদ্ধতি
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিমানের টিকেট ভাড়া নির্ভর করে ভ্রমণের রুট, সময় এবং বিমান সংস্থার উপর। সাধারনত, ডমেস্টিক ফ্লাইটের টিকেটের মূল্য ২,০০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। টিকেট কিনতে আপনি এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
অনলাইন টিকেট ক্রয়: বিমানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা টিকেট বুকিং সাইটে (যেমন: Travelyaari, Goibibo, MakeMyTrip) গিয়ে টিকেট বুক করতে পারেন।
এজেন্সি বা ট্রাভেল অফিস: আপনি যদি বিমান টিকেট এজেন্সি বা ট্রাভেল অফিসের মাধ্যমে বুক করেন, তবে সেখান থেকে সহায়তা পেতে পারেন।
এয়ারলাইন টিকেট কাউন্টার: বিমানবন্দরের কাউন্টার থেকেও সরাসরি টিকেট ক্রয় করতে পারেন।
৪. বিমানবন্দরের প্রক্রিয়া
বিমান ভ্রমণের পূর্বে আপনাকে কয়েকটি সাধারণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে:
চেক-ইন: আপনার ফ্লাইটের যাত্রা শুরু করার আগে চেক-ইন করতে হবে। অধিকাংশ বিমান সংস্থা অনলাইনে চেক-ইন সেবা দেয়, যাতে আপনি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর শুধুমাত্র ব্যাগেজ ড্রপ করতে পারেন।
ব্যাগেজ চেক: যাত্রার আগে আপনার লাগেজের সঠিক ওজন এবং সীমাবদ্ধতা চেক করে নিয়ে যাওয়া উচিত। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে সাধারণত ২০ কেজি পর্যন্ত ফ্রি চেক-ইন ব্যাগেজ এবং ৭ কেজি পর্যন্ত হ্যান্ড ক্যারি ব্যাগেজ অনুমোদিত থাকে।
সিকিউরিটি চেক: চেক-ইন করার পর সিকিউরিটি চেকপোস্টে আপনার ব্যাগেজ ও সেলফ চেকিং করতে হবে। সেখান থেকে আপনাকে নিরাপত্তা পরিদর্শন ও স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে।
গেট এবং বোর্ডিং: সিকিউরিটি চেক করার পরে, নির্ধারিত গেটের দিকে যেতে হবে এবং বোর্ডিং পাসে উল্লেখিত সময়ে গেটের কাছ থেকে বোর্ডিং করতে হবে।
৫. বিমানের সুবিধা
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিমান যাত্রায় কিছু সুবিধা পাওয়া যায়, যেমন:
আরামদায়ক আসন: অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে সাধারণত আরামদায়ক আসন প্রদান করা হয়।
নাস্তা ও পানীয়: বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ বিমানে নাস্তা বা পানীয় সার্ভ করা হয়, তবে এটি ফ্লাইটের সময়ের উপর নির্ভর করে।
বিমানবন্দর সুবিধা: বিমানবন্দরগুলিতে বিভিন্ন সুবিধা যেমন ওয়াইফাই, ডিউটি-ফ্রি শপ, লাউঞ্জ ইত্যাদি পাওয়া যায়।
৬. নিরাপত্তা ও সতর্কতা
ভ্রমণের পূর্বে কয়েকটি নিরাপত্তা সতর্কতা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ:
বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সময়: ফ্লাইটের যাত্রা সময়ের অন্তত ১.৫ থেকে ২ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছানো উচিত।
ডিজিটাল তথ্য: আপনার বিমানের টিকিট, বিমান সংস্থার যোগাযোগ তথ্য, এবং অন্যান্য যাত্রা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন।
আবহাওয়া: বিমান ভ্রমণের আগে আবহাওয়া সতর্কতা চেক করুন। বিশেষ করে দুর্যোগপূর্ণ মৌসুমে যাত্রা করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
৭. ভ্রমণ পরবর্তী
যাত্রার পরে, বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় আপনার লাগেজ সংগ্রহ করুন। এরপর আপনি আপনার গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য ক্যাব, রিকশা, অথবা অন্যান্য পরিবহন মাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন
I Love Bangladesh Airlines